‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ কি? বিভিন্ন দেশে ভ্যালেন্টাইন পালন!ইসলামী দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন?ভ্যালেন্টাইন ক্ষতিকর প্রভাব?


image

ভ্যালেন্টাইন ডে’ কি? বিভিন্ন দেশে ভ্যালেন্টাইন পালন!ইসলামী দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন?ভ্যালেন্টাইন ক্ষতিকর প্রভাব?
‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ কি? বিভিন্ন দেশে ভ্যালেন্টাইন পালন!ইসলামী দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন?ভ্যালেন্টাইন ক্ষতিকর প্রভাব?

‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ কি?

যুগ যুগ ধরে সারা বিশ্বে প্রেম, ভালবাসার স্মারক হয়ে আছে ভ্যালেন্টাইনস ডে’র উৎসব। ভ্যালেন্টাইনস ডে বলতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে হৃদয় আকৃতির মাঝে পাখাযুক্ত শিশুর চেহারার গ্রিক প্রেমের দেবতা কিউপিডের ছবি। আজকের এই ভালবাসার দিনটির শুরুর ইতিহাস অনেক পেছনের। আবার এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক কাহিনীও। ঐতিহাসিকরা বলছেন ৩৮১ সালেও এ উৎসব চালু ছিল। তখন জেরুজালেমে চালু ছিল এ উৎসব। পরবর্তীতে ৪৯৬ সালে পোপ প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সেন্ট ভ্যালেন্টানস ডে হিসেবে চালুর ঘোষণা দেন। এবং সেই থেকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন উৎসব চালু হয়। ১৭১২ সালের একটি সুইডিশ ক্যালেন্ডারে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টানস ডে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আর ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে ভালবাসা- ও উৎর্বরতার সম্পর্কের ইতিহাসও অনেক পুরনো। আবার

২৭০ খ্রিষ্টাব্দের কথা। তখন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস নারী-পুরুষের বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তার ধারণা ছিল, বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হলে যুদ্ধের প্রতি পুরুষদের অনীহা সৃষ্টি হয়। সে সময় রোমের খ্রিষ্টান গির্জার পুরোহিত ‘ভ্যালেন্টাইন’ রাজার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে গোপনে নারী-পুরুষের বিবাহ বাধনের কাজ সম্পন্ন করতেন। এ ঘটনা উদ্ঘাটিত হওয়ার পর তাকে রাজার কাছে ধরে নিয়ে আসা হয়। ভ্যালেন্টাইন রাজাকে জানালেন, খিষ্টধর্মে বিশ্বাসের কারণে তিনি কাউকে বিবাহ বাধনে আবদ্ধ হতে বারণ করতে পারেন না। রাজা তখন তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। কারাগারে থাকা অবস্খায় রাজা তাকে খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে প্রাচীন রোমান পৌত্তলিক ধর্মে ফিরে আসার প্রস্তাব দেন এবং বিনিময়ে তাকে ক্ষমা করে দেয়ার কথা বলেন। উল্লেখ্য, রাজা দ্বিতীয় ক্লডিয়াস প্রাচীন রোমান পৌত্তলিক ধর্মে বিশ্বাস করতেন এবং তৎকালীন রোমান সাম্রাজ্যে এ ধর্মের প্রাধান্য ছিল। যা হোক, ভ্যালেন্টাইন রাজার প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানালেন এবং খ্রিষ্ট ধর্মের প্রতি অনুগত থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন। তখন রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেন। অত:পর রাজার নির্দেশে ২৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। পরে রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিষ্ট ধর্মের প্রাধান্য সৃষ্টি হলে গির্জা ভ্যালেন্টাইনকে Saint’ হিসেবে ঘোষণা করে। ৩৫০ সালে রোমের যে স্খানে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল সেখানে তার স্মরণে একটি গির্জা নির্মাণ করা হয়। অবশেষে ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ গ্লসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে `Saint Valentine Day’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীর যুবতী মেয়েকে ভালোবাসার কারণে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ গ্লসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ ঘোষণা করেননি। কারণ, খ্রিষ্ট ধর্মে পুরোহিতদের জন্য বিয়ে করা বৈধ নয়। তাই পুরোহিত হয়ে মেয়ের প্রেমে আসক্তি খ্রিষ্ট ধর্মমতে অনৈতিক কাজ। তা ছাড়া, ভালোবাসার কারণে ভ্যালেন্টাইনকে কারাগারে যেতে হয়নি। কারণ, তিনি কারারক্ষীর মেয়ের প্রেমে পড়েছিলেন কারাগারে যাওয়ার পর। সুতরাং, ভ্যালেন্টাইনকে কারাগারে নিক্ষেপ ও মৃত্যুদণ্ডদানের সাথে ভালোবাসার কোনো সম্পর্ক ছিল না। তাই ভ্যালেন্টাইনের কথিত ভালোবাসা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ডে’র মূল বিষয় ছিল না। বরং ধর্মের প্রতি গভীর ভালোবাসাই তার মৃত্যুদণ্ডের কারণ ছিল।

image

যাই হোক, প্রচলিত এই কাহিনী

কতটুকু অপ্রিয় বা সত্য ,সেটা আমরা জানি না। তবে এটুকু জানি যে, ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কোন বিশেষ দিনের প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি দিন,ভালোবাসার দিন, ভালোবাসা প্রকাশের দিন। তবুও প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী আজকের এই দিনটি আমাদের কাছে একটু বিশেষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিভিন্ন দেশে ভ্যালেন্টাইন পালন!

বিভিন্ন

ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালবাসা দিবস এখন আর কেবল যুবক-যুবতীদের প্রেম-ভালবাসার ধারক হয়ে নয় বরং বিশ্ব মানবতার প্রতীক হিসেবেই বেশি সমাদৃত। তবে স্বাভাবিকভাবেই তরুণ হৃদয়ের উষ্ণতায়, উচ্ছ্বাসে এ দিনটা বর্ণিল হয়ে উঠে। সার্বজনীন এক ভালোবাসা উৎসব হলেও শুধু প্রেম নিবেদনের মধ্যে এটি আর সীমাবদ্ধ নেই। মমতা, প্রীতি, স্নেহ এবং যত্ন প্রকাশের এবং বিনিময়ের দিন এটি। যার মাধ্যমে দৃঢ় হয় সম্পর্ক, গড়ে উঠে নতুন আত্মীয়তা বা বন্ধুত্ব। ইদানিংকার ভ্যালেন্টাইন’স ডে একেবারে অন্যরকম, যেমন-

=> উপহার বিনিময়ে খরচ হয় প্রায় ২২ মিলিয়ন ডলার

=> প্রায় সাত মিলিয়ন গোলাপ বিনিময় করা হয়

=> প্রায় ১২ মিলিয়ন কার্ড বিনিময় করা হয় এ দিন উপলক্ষে।

২০০১ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারা বিশ্বে ‘ভালোবাসা দিবস’ উপলক্ষে প্রায় ৩০ মিলিয়ন মোবাইল টেক্সট মেসেজ আদান প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কার্ড বা চকোলেটের দিন শেষ। টেলিফোন বা মোবাইলই হয়ে উঠছে ভ্যালেন্টাইন ডে’র প্রধান অনুসংগ।

স্বকীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী দেশে দেশে বিভিন্ন ভাবে ভালবাসা দিবস পালিত হয়। যেমনঃ

=> আমেরিকানদের মন মেজাজ বিচিত্র রকমের। কার্ড আদান প্রদান তাদের সাধারণ রীতি। তারা বন্ধুর সাথে বেড়িয়ে, পার্টি আয়োজন করে, হুল্লোড় করে এদিনটি পালন করে। আরও কতো কি যে পালন করে তারা। তবে কোন রীতি বা প্রথা নেই। যার যেমন ইচ্ছে তেমনি করে দিনটি উদযাপন করে।

=> ব্রিটেনের বিভিন্ন অংশে নিজস্ব ঢংয়ে ভ্যালেন্টাইন’স ডে পালন করা হয়। তবে সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন কার্ড, উপহার, চকোলেট বিনিময় একটি সাধারণ রীতি। ছেলে যুবাদের মুখে মুখে এদিন একটি গান সমস্বরে উচ্চারিত হয়। এদিন কেওরা বিচি, আলুবোখারা ও কিসমিস দিয়ে তৈরি একপ্রকার রুটি বানিয়ে তারা মজা করে খায়।

=> স্পেনে প্রেমিক-প্রেমিকারা এ দিন বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিনিময় করে আর স্বামী-স্ত্রীরা লাল গোলাপের তোড়া বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের ভালবাসা ঝালাই করে নেয়।

=> স্কটল্যান্ডে ভ্যালেন্টাইন’স ডে একটি জাঁকালো উৎসব। এ উৎসবের একটি পর্ব এমন যে, সমান সংখ্যক নারী এবং পুরুষ টুকরো কাগজে যার যার নাম লিখে দুটি টুপিতে নেয়। একটি মেয়েদের জন্য অন্যটি ছেলেদের জন্য। মেয়েটি যে ছেলের নাম তুলেছে, সেই একই মেয়ের নাম যদি ছেলেটি তুলে তাহলে তো কথাই নেই। তবে সে রকম হয়না বললেই চলে। অবশেষে ছেলেদের তোলা নাম অনুসারেই মেয়েরা তাদের সঙ্গী হয় এবং তারা পরস্পর উপহার বিনিময় করে এবং নাচ গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

=> ইটালিতে একদা ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করা হতো বসন্ত উৎসব হিসাবে। এদিনে যুবক-যুবতীরা ছায়াবিথী বা সাজানো বাগানে জমায়েত হয়ে গান শুনে এবং কবিতা আবৃত্তি করতো। তবে শতাব্দিরও বেশী সময় ধরে এভাবে আর পালিত হচ্ছে না। ইতালির তুরিনে এ দিনে বাগদত্তা দম্পতিরা তাদের বাগদানের কথা ঘোষণা করতো। দেখুন তো ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র জন্মস্থানে এ দিনটির পালন রীতি।

=> জার্মানীতে এদিন ফুল দেয়া-নেয়া খুব চলে। তবে প্রেমবাণী খচিত হৃদয় আকৃতির কোন কিছু দেয়াটা এখন প্রথা। এখানে এই সামান্য উপহার বিনিময় ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোন কিছু অনুষ্ঠিত হয় না।

=> ডেনমার্কে ভ্যালেন্টাইন’স ডে কার্ডকে বলা হয় ‘লাভার’স কার্ড’। ডেনিসরা তাদের প্রেয়সি কে কবিতা বা ছড়া লিখে পাঠায়। তবে কার্ডে তাদের নাম না লিখে তার বদলে ‘. . .’ এ ধরনের ডট ডট চিহ্ন দেয়। যদি প্রেয়সী ধরতে পারে যে কে পাঠিয়েছে সে কার্ড, তবে সে পরবর্তীতে একটি ‘Easter Egg’ উপহার পায়।

=> জাপানের ভ্যালেন্টাইন’স ডে তে চকোলেট আদান প্রদানের রেওয়াজ একটু বেশি। আর জাপানি মেয়েদের ধারণা দোকান থেকে কেনা উপহারসামগ্রী প্রকৃত ভালোবাসার পরিচয় বহন করে না। তাই তারা প্রিয়জনকে নিজের হাতে তৈরি উপহার দিতে পছন্দ করে বেশি।
=> তাইওয়ানে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন’স ডে পালন করা হলেও চৈনিক একটি উপকথা অনুযায়ী তাদের নিজস্ব দিনপঞ্জি অনুসারে ৭ জুলাই তারিখে তারা আবারও ভালোবাসা দিবস আঙ্গিকে আরেকটি অনুষ্ঠান পালন করে। এদিন তারা পরস্পর কে লাল গোলাপের তোড়া উপহার দেয়। তাইওয়ানে ফুলের তোড়াতে গোলাপের সংখ্যা অনেক অর্থবোধক। যেমন- একটি গোলাপ মানে ‘শুধু ভালোবাসি’ এগারটি গোলাপ মানে ‘তুমি আমার খুব পছন্দের মানুষ’, নিরানব্বইটি গোলাপ মানে ‘তোমার ভালোবাসা চিরদিন আমার মনে জাগরুক থাকবে’ এবং একশো আটটি গোলাপ দেয়া মানে ‘আমি তোমার সাথে বিয়েতে রাজি’।

পাশ্চাত্যের হাত ধরে বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে যোগ হওয়া উৎসবগুলোর মধ্যে প্রথম সারির দিবসটির নাম বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ইংরেজিতে সেন্ট বা ওয়ার্ল্ড ভ্যালেন্টাইনস ডে। যে নামেই ডাকি না কেন, দিনটি এখন বাঙালি তরুণ-তরুণীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অন্যতম দিবসে পরিণত হয়েছে। হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুলপ্রায় পেমপিয়াসীরা এই দিনকে বেছে নেয় রঙের ছটায়, গোলাপের শুভেচ্ছা জানাবে মনের মানুষকে। যদিও ইতিহাসের পাতা ওল্টালে বাংলার ১৪ ফেব্রুয়ারী এক বেদনাময় দিন হিসাবে দেখা যায়। ভেসে ওঠে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলো। বিনা রক্তপাতে সামরিক অভ্যুথানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণকারী জেনারেল এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলার সংশপ্তক ছাত্রসমাজ।মজিদ খান প্রণীত বৈষম্যমূলক ও বাণিজ্যিকীকরণের শিক্ষানীতি প্রত্যাখ্যান করে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ও মিছিলের ডাক দেয়। সেই মিছিলে এরশাদের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী হামলা চালায়। বেয়নট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে ছাত্রনেতা জয়নালকে, গুলিতে নিহত হয় কাঞ্চন, ফারুক, আইয়ুব, প্রাণ হারায় দীপালি সাহা নামে এক অবুঝ শিশুর। এই দিন এরশাদ নিজের অজান্তে বারুদে আগুন দিয়েছিল, আর সেই বিদ্রোহের আগুন দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল জাতির সমস্ত চেতনায়। জয়নাল-কাঞ্চনদের দেখানো পথে হেঁটেছিলেন নূর হোসেন,ডাঃ মিলন সহ নাম না জানা আরো অনেকে।আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়, গণতন্ত্রের পতাকা শহীদের রক্তে স্নাত হয়ে আবার উড্ডীন হয়। গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ শুরু হয় ছাত্রজনতার প্রথম প্রতিবা্দ, প্রথম বিক্ষোভে ফেটে পড়া, প্রথম আত্মদান, সামরিক বেষ্টনী গুড়িয়ে গন তন্ত্রের সুবাতাস আহবান করা । বিশ্ব কাঁপানো সেই শহীদী আত্মদান ভ্যালেন্টাইন্স ডে”র আড়ালে চাপা পড়ে গেছে অনেকটা ।

বাংলা বসন্তের দ্বিতীয় ১৪ ফেব্রুয়ারী স্বপ্নীল সাজে প্রকৃতি সাজবে বাহারি রঙে। তেমনি বাহারি পোশাকে প্রিয় মানুষটির দৃষ্টি আকর্ষণে সাজবে কপোত-কপোতি। আর চোখে-মুখে আনন্দের নহর নিয়ে আসা প্রিয় মানুষটির মুখ থেকে ভালোবাসার প্রস্তাব শুনতেও ব্যাকুল হয়ে উঠবে যুবক-যুবতীরা। বসন্তের উতল হাওয়ায় আজ প্রেম দেব ঘুরে ফিরবেন হৃদয় বন্দরে। মনে মনে লাগবে দোলা, ভালোবাসার রঙে রাঙাবে হৃদয়।

ইসলামী দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাই

islam

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি ও কল্যাণ বর্ষিত হোক তাঁর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এঁর ওপর, তাঁর পরিবার এবং সাহাবীগণের ওপর, এবং সেই সকল লোকদের ওপর, কিয়ামত পর্যন্ত যারা সত্যের পথ অনুসরণ করবে ৷
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন বা জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে বাছাই করেছেন এবং তিনি অন্য কোন জীবন-ব্যবস্থা কখনও গ্রহণ করবেন না, তিনি বলেন:
“এবং যে কেউই ইসলাম ছাড়া অন্য কোন জীবন-ব্যবস্থা আকাঙ্খা করবে, তা কখনোই তার নিকট হতে গ্রহণ করা হবে না, এবং আখিরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ৷” (সূরা আলে ইমরান, ৩:৮৫)

এবং নবী(সা.) বলেছেন, এই উম্মাতের মধ্যে কিছু লোক বিভিন্ন ইবাদতের প্রক্রিয়া ও সামাজিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে আল্লাহর শত্রুদের অনুসরণ করবে ৷ আবু সাঈদ আল খুদরী(রা.) বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ(সা.) বলেন:

“তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণে লিপ্ত হয়ে পড়বে, প্রতিটি বিঘৎ, প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্যে [তাদের তোমরা অনুসরণ করবে], এমনকি তারা সরীসৃপের গর্তে প্রবেশ করলে, তোমরা সেখানেও তাদেরকে অনুসরণ করবে ৷” আমরা বললাম, “হে রাসূলুল্লাহ ! তারা কি ইহুদী ও খ্রীস্টান?” তিনি বললেন: “এছাড়া আর কে?” (বুখারী, মুসলিম)

আজ মুসলিম বিশ্বের বহু স্থানে ঠিক এটাই ঘটছে, মুসলিমরা তাদের চালচলন, রীতিনীতি এবং উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রে ইহুদী ও খ্রীস্টানদের অনুসরণ করছে ৷ টিভি, পত্রপত্রিকা, ম্যাগাজিন, স্যাটেলাইট চ্যানেল, ইন্টারনেটের মত মিডিয়ার প্রচারে কাফিরদের অনুসৃত সমস্ত রীতিনীতি আজ মুসলিমদের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচেছ এবং এর অনুসরণ ও অনুকরণ সহজতর হয়ে উঠেছে ৷

মুসলিম সমাজে প্রচলিত এরূপ বহু অপসংস্কৃতির সাথে একটি সাম্প্রতিক সংযোজন হচেছ “ভ্যালেন্টাইন’স ডে”, যা “ভালবাসা দিবস” নামে বাঙালী মুসলিম সমাজের যুবক-যুবতীদের মাঝে ঢুকে পড়েছে এবং ক্রমে জনপ্রিয়তা লাভ করছে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এ দিবসটি পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করছে ৷ এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামের আলোকে এই ভালবাসা দিবসকে মূল্যায়ন করে বাঙালী মুসলিম সমাজের মুসলিম যুবক-যুবতীদের বোধশক্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে তাদেরকে কাফিরদের অন্ধ অনুসরণ থেকে নিবৃত্ত করা ৷ নিশ্চয়ই ইহুদী ও খ্রীস্টানসহ অন্যান্য কাফিরদের সংস্কৃতির অনুসরণের পরিসমাপ্তি ঘটবে জাহান্নামের আগুনে, তাই বর্তমান নিবন্ধের উদ্দেশ্য আমাদের যুবসম্প্রদায়কে জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে জান্নাতের প্রশান্তির দিকে আহবান করা ৷

প্রথমে “ভ্যালেন্টাইন’স ডে”র উৎস এবং প্রচলন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক ৷

“ভ্যালেন্টাইন’স ডে”র উৎস হচ্ছে সতের শত বছর আগের পৌত্তলিক রোমকদের মাঝে প্রচলিত “আধ্যাত্মিক ভালবাসা”র উৎসব ৷ রোমানদের এই পৌত্তলিক উৎসবের সাথে কিছু কল্পকাহিনী জড়িত ছিল, যা পরবর্তীতে খ্রীস্টান রোমকদের মাঝেও প্রচলিত হয়ে পড়ে ৷ এ সমস্ত কল্প-কাহিনীর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে এই বিশ্বাস যে, এই দিনে রোমের প্রতিষ্ঠাতা রমিউলাস একটি নেকড়ের দুধ পান করেছিলেন, যা ছিল তার শক্তি ও জ্ঞানের উৎস ৷ এই দিনে পালিত বিচিত্র অনুষ্ঠানাদির মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে, দুজন শক্তিশালী পেশীবহুল যুবক গায়ে কুকুর ও ভেড়ার রক্ত মেখে তারপর দুধ দিয়ে তা ধুয়ে ফেলার পর এ দুজনকে সামনে নিয়ে বের করা দীর্ঘ পদযাত্রা ৷ এ দুজন যুবকের হাতে চাবুক থাকত যা দিয়ে তারা পদযাত্রার সামনে দিয়ে যাতায়াতকারীকে আঘাত করত ৷ রোমক রমণীদের মাঝে কুসংস্কার ছিল যে, তারা যদি এই চাবুকের আঘাত গ্রহণ করে, তবে তারা বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পাবে, এই উদ্দেশ্যে তারা এই মিছিলের সামনে দিয়ে অতিক্রম করত ৷

যাহোকরোমকরা খ্রীস্টধর্ম গ্রহণের পরও এই উৎসব উদযাপনকে অব্যাহত রাখে, কিন্তু এর পৌত্তলিক খোলস পাল্টে ফেলে একে খ্রীস্টীয় খোলস পরানোর জন্য তারা এই উৎসবকে ভিন্ন এক ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট করে ৷ এই ঘটনা হচেছ সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক জনৈক খ্রীস্টান সন্ন্যাসীর জীবনোৎসর্গ করার ঘটনা ৷ মূলত ইতিহাসে এরূপ দুজন সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের কাহিনী পাওয়া যায় ৷ এদের একজন সম্পর্কে দাবী করা হয় যে, তিনি শান্তি ও প্রেমের বাণী প্রচারের ব্রত নিয়ে জীবন দিয়েছিলেন, আর তার স্মরণেই রোমক খ্রীস্টানরা এই উৎসব পালন অব্যাহত রাখে ৷ এই সময়টাতেই “আধ্যাত্মিক ভালবাসা”র উৎসব, রূপান্তরিত হয়ে জৈবিক কামনা ও যৌনতার উৎসবে রূপ নেয় ৷ এ ধরনের উৎসবের মধ্যে যোগ করা হয় একবছরের জন্য সঙ্গী বাছাইয়ের অনুষ্ঠান, যাতে একজন তরুণের জন্য একটি তরুণীকে একবছরের জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হত, তারা একবছর

পরস্পরের সাথে মেলামেশা করার পর একে অপরের প্রতি আগ্রহী হলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হত, নতুবা পরবর্তী বছরেও এই একই প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতো ৷

খ্রীস্টান ধর্মের ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা এই প্রথার বিরুদ্ধে ছিলেন, কেননা তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে, এটা সমাজে অশালীনতা ও ব্যাভিচারকে ছড়িয়ে দিয়ে সমাজকে ধবংস করার জন্য শয়তানের বহু কূটচালের একটি, এবং ধর্মের সাথে এর কোন সম্পর্কই নেই ৷ এমনকি খ্রীস্টধর্মের প্রাণকেন্দ্র ইতালীতে এই প্রথা অবশেষে বিলুপ্ত করা হয়৷ তবে আঠার ও ঊনিশ শতকে তা সেখানে পুনরায় চালু হয় ৷

“ভ্যালেন্টাইন’স ডে”র উৎস সম্পর্কে আরেকটি মতবাদ হচেছ এই যে, এর উৎস খ্রীস্টীয় ৩য় শতকে রোমক সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের শাসনামলে ৷ এসময় ক্লডিয়াস একটি বিধান জারী করেন যে, সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না, কেননা বিবাহ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে দৃঢ় থাকাকে ব্যাহত করবে ৷ এ সময় সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন এই আইনের বিরুদ্ধাচরণ করেন এবং গোপনে সৈনিকদের বিয়ের কার্য সমাধা করতে থাকেন ৷ যাহোক, এর পরিণতিতে তাকে কারাবরণ করতে হয় এবং পরিশেষে সম্রাট তাকে খ্রীস্টধর্ম পরিত্যাগের বিনিময়ে মুক্তি ও পুরস্কারের লোভ দেখান, কিন্তু তিনি খ্রীস্টধর্মের ওপর অটল থেকে মৃত্যুদন্ড মাথা পেতে নেন ৷ তার প্রাণদন্ড কার্যকরের তারিখটি ছিল খ্রীস্টীয় ২৭০ শতকের ১৪ই ফেব্রুয়ারী, যা কার্যকর হয় ১৫ই ফেব্রুয়ারী লুপারক্যালিয়া* উৎসবের প্রাক্কালে ৷ সেজন্য এই দিনটিকে ঐ পাদ্রীর নামে নামকরণ করা হয় ৷

খ্রীস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ১৪ই ফেব্রুয়ারীকে ভালবাসার উৎসব দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন ৷ দেখুন, কিভাবে খ্রীস্টানদের সর্বোচ্চ এই “ধর্মীয় নেতা” একটি নব-উদ্ভাবনকে ধর্মীয় বেশ পরিয়ে সমাজে চালু করে দিলেন, আর কিভাবে খ্রীস্টানরাও একে সাদরে গ্রহণ করে নিল, এজন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে বলেছেন:

“তারা তাদের পন্ডিত এবং সন্ন্যাসীদেরকে আল্লাহর পাশাপাশি তাদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে ৷” (সূরা আত তাওবাহ্ , ৯:৩১)

একদা রাসূলুল্লাহ্ র সাহাবী আদি ইবন হাতিম (রা), [যিনি খ্রীষ্ট ধর্ম ছেড়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত হন, তিনি ] আল্লাহর রাসূল (সা.) কে উপরোক্ত আয়াতটি পাঠ করতে শুনে মন্তব্য করলেন, ‘নিশ্চয়ই আমরা তাদের ইবাদাত করতাম না ৷’ আল্লাহর রাসূল (সা.) তাঁর দিকে ফিরে প্রশ্ন করলেন: “এমনকি হতো না যে, আল্লাহ যা হালাল করেছেন, তারা তা হারাম করে দিত আর তোমরাও সেগুলোকে হারাম বলে গণ্য করতে, আর আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তারা তাকে হালাল করে দিত, এবং তোমরাও সেগুলোকে হালাল করে নিতে?”, তিনি জবাবে বললেন: “হাঁ, আমরা নিশ্চয়ই তাই করতাম৷” আল্লাহর রাসূল (সা) বললেন; “ওভাবেই তোমরা তাদের ইবাদত করতে৷”

দ্রষ্টব্য:ইসলামী দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন কিরুপে
#এই লেখার হবুহুব গৃহীত হয়েছে শায়খ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ওয়েব সাইট http://www.islam-qa.com-এর একটি নিবন্ধ থেকে ৷

ভ্যালেন্টাইন ক্ষতিকর প্রভাব?

ক্ষতি

যারা ভালো বাসে, এদের বেশিরভাগ মেয়ের চোখে দেখবেন বিশ্বাস আর বেশিরভাগ ছেলের কাকুতি মিনতি । সেই ভালোবাসার শেষ পরিনতি
কিন্তু এই বিভিন্ন সেক্স সাইটে বাংগালী মেয়েদের নগ্ন ভিডিও। পরিমল জয়ধরা ওত পেতে থাকে । আর আপনাদেরকে শিকার বানিয়ে ফেলে । একটু অসাবধানতা হবে আপনার জীবনের কাল অধ্যায় ।
তবে আপিরা কিছু ব্যাপারঃ
আপনি জেনে রাখুন এই দিনঃ

১- অনেক মেয়ে সতীত্ব
হারাবে। পরে সেই প্রেমিকই তাকে
বলবে পতিতা।

২-আরো পড়ুন তারুণ্যের ব্লগে

Kolkata Kolaz – Various Bangla Bands Mp3 Songs Download


image

I am browsing [Kolkata Kolaz – Various Bangla Bands Mp3 Songs Download]. Have a look at it! download